বিজন আয়নার পরাপাঠ্য > ছোটগল্প >> এমরান কবির
প্রকাশঃ June 24, 2017

বিজন আয়নার পরাপাঠ্য
অতল রক্তের ভেতরে আমরা হাবুডুবু খেতে লাগলাম।
একটু সময় লাগলো ধাতস্ত হতে। তাতে কী! একটু আগের দুধেল বর্ণেল জোসনা বিধৌত চরাচর এখন নীলান্ত নীল রক্তের দখলে। প্রবল ঢেউ শুরু হলো। শুরু হলো চাঁদ ও রক্তের প্রতিফলনে রচিত বিম্ব। শুরু হলো চাঁদের আলোয় লক্ষ কোটি রক্তকণার নীলান্ত নীল দংশন। শুরু হলো চাঁদের আলোয় লক্ষ কোটি রক্ত-ঢেউয়ের নীলান্ত নীল ঝিকিমিকি। এইসব বিম্ব, এইসব ঢেউ, এইসব নীলান্ত নীল দংশন, এইসব নীলান্ত নীল ঝিকিমিকির মাঝে আমরা দুটি প্রাণী সাঁতার কাটার প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু ক্রমশঃ আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে যেন। আমরা আমাদের শরীরকে ভারি অনুভব করছি। এবং বুঝতে পারছি এ অবস্থা চলতে থাকলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা আমাদের বাঁচার চেষ্টা পূর্ববৎ করতে পারব না।
ঢেউগুলো ক্রমশ বৃহৎ থেকে বৃহত্তর হতে থাকলো। আমরা আমাদের শক্তি হারাতে থাকলাম। এর ভেতরে দূরে দু’জন ব্যক্তিকে দেখা গেলো। তারা রক্তের উপর দিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে হেঁটে হেঁটে আসছে। একজন ক্রাচে ভর দিয়ে একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। তার এক হাতে একটা ছড়ি। আরেকজনের চোখে কালো রোদ-চশমা।
আশিক বলল, ‘আমি এদেরকে চিনি।’
আমি বললাম, ‘কে এঁরা।’
আশিক বলল, ‘একজন সাবেক কর্নেল আরেকজন সাবেক মেজর জেনারেল।’
আমি সতর্ক দৃষ্টি রাখলাম তাদের উপর। এও ভাবতে লাগলাম আশিক এদেরকে কীভাবে চেনে? যেভাবে বলল তাতে এরা সর্বজন বিদিত, কিন্তু আমি চিনতে পারছি না কেন? আমি আরো ভালোভাবে তাদেরকে লক্ষ করতে লাগলাম। আমি আরো ভালোভাবে তাদেরকে চিনবার চেষ্টা করলাম। আমি আরো ভালোভাবে তাদেরকে মনে করবার চেষ্টা করলাম।
তাদেরকে চেনা চেনা মনে হলো। কিন্তু ঠিক ঠিক চিনতে পারলাম না। মনে হলো একবার, আমি এদেরকে দেখেছি কোথাও। আরেকবার মনে হলে আমি এদেরকে অনেকবার দেখেছি। কিন্তু কোথায় দেখেছি তা মনে করতে পারলাম না। কিংবা কীভাবে তাদের সাথে দেখা হয়েছিল তাও মনে করতে পারলাম না। কিংবা কেনই বা তাদেরকে আমি দেখেছিলাম তাও মনে করতে পারলাম না। ফলে খানিকটা চেনা, খানিকটা না-চেনা মনে হতে থাকলো। ফলে খানিকটা দেখা, খানিকটা না-দেখা মনে হতে থাকলো। কিন্তু এখন তাদেরকে চিনতে পারা না-পারাটাকে মোটেও গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো না। এই দুধেল বর্ণের জ্যোৎস্না বিধৌত চরাচরে নীলান্ত নীলের রক্তের ঢেউয়ের ভেতরে এরকম কাউকে দেখলে কৌতুহল জাগতেই পারে বৈকি। খানিকটা গুরুত্বপূর্ণও মনে হতে পারে। কিন্তু তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো না। শুধু কৌতুহল থেকে গেল।
সেই কৌতুহলের জন্যই কি-না জানি না, আমি তাদেরকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। এমনকি আশিককে জিজ্ঞেসও করলাম না তুই এদেরকে কীভাবে চিনিশ? তাহলে হয়তো একটা ক্লু পাওয়া যেত। তাহলে হয়তো আমি মনে করতে পারতাম তাদেরকে আমি চিনি কি-না। আমি এসবের কিছুই করলাম না।
আমি দেখলাম ডানহাতে ছড়িটি নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা মানুষটা, আশিক যাকে সাবেক কর্নেল হিসেবে ইঙ্গিত করেছিল, সে খুবই অস্থিরভাবে বাতাসে ছড়িটি ঘোরাতে লাগলো। আমি তার এই কাণ্ড দেখবার পাশাপাশি রোদ-চশমা পরা লোকটার দিকে চোখ রাখলাম, আশিক যাকে সাবেক মেজর জেনারেল হিসেবে ইঙ্গিত করেছিল। তার সূক্ষ গোঁফের নিচে পাতলা ঠোঁট দুটোর মাঝে জিহ্বার অগ্রভাগ দেখা গেল। সাবেক কর্নেল সাবেক মেজর জেনারেলের জিহ্বার অগ্রভাগের দিকে তাকিয়ে তাঁর ছড়ি ঘোরানোর গতি একটু কমিয়ে দিলো। তা অবশ্য খুবই অল্প সময়ের জন্য। সাবেক মেজর জেনারেল এবার তার জিহ্বার অগ্রভাগ আরেকটু বের করল। সাবেক কর্নেল সে-দৃশ্য দেখে পাগলের মতো ছড়ি ঘোরানো শুরু করল। বাতাসের গায়ে সে ছড়ি সপাং সপাং শব্দ করে আঘাত করতে থাকলো।
আমরা লক্ষ করলাম ঢেউগুলো আর আগের মতো প্রবল বেগে আসছে না। একটু স্থিরভাব চলে এসেছে এই নীলান্ত নীল রক্তের সাগরে। আমরা আরো লক্ষ করলাম একটা বিশাল অসমাপ্ত ঢেউয়ের উপর দাঁড়িয়ে আছেন একজন সাবেক কর্নেল এবং একজন সাবেক মেজর জেনারেল।
সাবেক কর্নেল বাতাসে আরো জোরে ছড়ি দিয়ে আঘাত করতে শুরু করল। তার ছড়ি ঘোরানোর বেগ ক্রমাগত বাড়তেই থাকলো। এদিকে সাবেক মেজর জেনারেলের জিহ্বা আগের চেয়ে বৃহৎ হয়ে মুখ গহ্বর থেকে বাহিরে বের হয়ে আসতে থাকলো। একটু আগের হাসি হাসি মুখকে এখন খানিকটা কিম্ভুৎ লাগতে শুরু করেছে। সাবেক মেজর জেনারেলের জিহ্বার সঞ্চালন আরো বেড়ে গেলো। সে-দিকে একবার তাকিয়ে সাবেক কর্নেল হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলল যেন। বাতাসে তার ছড়ি ঘোরানোর বেগ আরো বেড়ে গেলো। সাবেক মেজর জেনারেল হঠাৎ জিহ্বা সঞ্চালন বন্ধ করে একটা বিকট অট্টহাসি দিলো। সাবেক কর্নেল সে-দিকে লক্ষই করল না। কিংবা লক্ষ করবার সুযোগই পেলো না। সাবেক মেজর জেনারেল এবার তার জিহ্বা ধীর স্থির ভাবে বের করতে লাগলো। বের হতে হতে সে-জিহ্বা এমন আতিকায় রূপ নিলো যে, এই চরাচরের উপরে থাকা দুধেল বর্ণের সমস্ত জোছনা অন্ধকারে গ্রাস হয়ে গেলো। গ্রাস করা সে-জোছনার অন্ধকারে, তার আতিকায় জিহ্বার উপরে দেখা গেলো একটা পতাকা দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। সাবেক মেজর কী যেন বলল ফিসফিস করে। তখনই সে-পতাকা আস্তে আস্তে নড়ে উঠল। তার নড়াচড়া ক্রমাগত বাড়তে থাকলো। বাড়তে বাড়তে একসময় পতপত করে উড়তে থাকলো।
আমরা লক্ষ করলাম তার জিহ্বার উপরে উড়তে থাকা সে-পতাকা। চাঁদ আছে সে-পতাকায়। তারা আছে অনেকগুলো সে-পতাকায়। আমরা জোছনা পছন্দ করলেও এই চাঁদ-তারা পছন্দ করি না। আমরা পছন্দ করি সবুজের সমারোহের ভেতরে ভোরের উদীয়মান এবং উদিত সূর্য। আমরা হতাশ হয়ে যখন মুখ চাওয়াচাওই করছি তখন দেখা গেলো তার জিহ্বার উপরে উড়ন্ত পতাকার নিচে কতিপয় জানোয়ারের মুখ। তারা কথা বলছে। তারা কথা বলছে উর্দুতে।
সে-দিকে সাবেক কর্নেল তাকালো। তাকিয়ে স্থির হলো একটু। তখন আমাদের ভেতরেও যেন অলৌকিক কোনো ক্ষমতা বিরাজ করছিলো। আমরা সাবেক কর্নেলের চোখের দিকে তাকানোর চেষ্টা করলাম। এবং এত দূর থেকে, জিহ্বার অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া চাঁদের আলোর ভেতর থেকে, কিম্ভুত হয়ে যাওয়া সাবেক মেজর জেনারেলের চেহারা ভেদ করে, সাবেক কর্নেলের ছড়ি ঘোরানোর চঞ্চলতা ভেদ করে তার চোখের ভেতরে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হযে গেলো। আমরা জানতাম এত দূরে থেকে কোনাভাবেই এত সূক্ষভাবে দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা কীভাবে যেন এই ক্ষমতা অর্জন করে ফেললাম। তাতে আমরা আরেক দফা বিস্মিত হলাম কি? বোধ হয় না। কারণ আমাদের চারপাশে এখন এতই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যে আমরা ক্রমাগত বিস্মিত হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি। বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতাও হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের। আমরা একটা জিনিস করতে পারছি সেটাই যেন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে আমাদের কাছে। কিন্তু বাস্তবে এটা সম্ভব কি-না, বাস্তবে এটা যুক্তিগ্রাহ্য কি-না, এটা বিশ্বাস্য কি-না সেগুলো খতিয়ে দেখছি না। সামনে কী ঘটছে সেটাই আমাদের কাছে বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। এবং আমি সে দৃশ্য দর্শনের ক্ষমতা পেয়েছি, এটাই যেন আমাদের পরম প্রাপ্তি হিসেবে হাজির হচ্ছে। ফলে কী দেখছি সেটাই এখন আমাদের কাছে মহৎ, কীভাবে দেখছি সেটা গৌণ।
আমরা দেখলাম, সাবেক কর্নেলের চোখের ভেতরে অনেক আনন্দ। কারণ সাবেক কর্নেলের চোখের ভেতরে দেখা যাচ্ছে লাল সবুজের পতাকা। দেখা যাচ্ছে সে পতাকাকে আরো সমুন্নত রাখার দৃপ্ত প্রত্যয়। দেখা যাচ্ছে সাবেক মেজর জেনারেলের জন্য তার গর্বিত উদ্ধত বুক। দেখা যাচ্ছে তার প্রবল উৎসাহ। দেখা যাচ্ছে তার চোখে অনেক আনন্দ। দেখা যাচ্ছে তার চোখে অনেক স্বপ্ন। দেখা যাচ্ছে তার চোখে অনেক প্রাপ্তির উত্তাপ। কারণ সাবেক কর্নেল দেখছিল, জিহ্বার উপরে যারা কথা বলছে তারা সব গাইছে, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
আমরা একবার সাবেক মেজর জেনারেলের জিহ্বার উপরে ঘটে যাওয়া কাণ্ড দেখি আরেকবার সাবেক কর্নেলের চোখের ভেতরে প্রতিফলিত দৃশ্যটি দেখি। যখন আমরা দেখি দৃশ্য এক কিন্তু প্রতিবিম্বিত চিত্র আরেক তখন আমাদের বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায়। আমরা জানি পৃথিবীর হাজারো দীর্ঘশ্বাসের মতো এ দীর্ঘশ্বাসটিও হারিয়ে যাবে। এর কোনো পরিসংখ্যানগত মূল্য থাকবে না।
সাবেক কর্নেল এবার বাতাসে ছড়ি ঘোরানো বন্ধ করল। সে যেখানে দাঁড়িয়েছিল সেখানেই কয়েকটা জোরে আঘাত করল। ছলাৎ করে শব্দ হলো যেন। যেন ঝনাৎ করে শব্দ হলো। যেন হিশহিশ শব্দ হলো। যেন হাজারো পাহাড় ভেঙে পড়ার মতো শব্দ হলো। রক্তগুলো লাফিয়ে উঠল। বেড়ে গেলো ঢেউয়ের আনাগোনা। সাবেক কর্নেল আরো জোরে জোরে বাড়ি দিতে লাগলো রক্তের উপরে। তাতে বিবিধ রকমের শব্দের উৎপত্তি হতে থাকলো। রক্তের প্রবাহ বেড়ে গেলো দ্বিগুন। বাড়তে থাকলো ঢেউয়ের উচ্চতা। বাড়তে থাকলো রক্তোচ্ছাসের স্ফীতি। সাবেক কর্নেল আরো জোরে জোরে বাড়ি দিতে লাগলো। রক্ত তখন আরো তেজী হয়ে উঠল। তেজী হয়ে উঠলো শব্দে। তেজী হয়ে উঠল প্রবাহে। তেজী হয়ে উঠল ঢেউয়ে। তেজী হয়ে উঠল রক্তোচ্ছাসের প্রবাহে।
রক্তগুলো যেন উন্মাদ হতে থাকলো। রক্তগুলো যেন মেঘ হয়ে উড়তে চায়। রক্তগুলো যেন পাহাড় হয়ে উঠতে চায়। রক্তগুলো যেন রাক্ষস হয়ে উঠতে চায়। রক্তগুলো যেন রক্তাক্ত খেলায় মেতে উঠতে চায়। একসময় রক্তগুলো সাবেক মেজর জেনারেলের জিহ্বাকে ছুঁয়ে ফেলল। জিহ্বায় ছোঁয়ামাত্র সেখান থেকে বের হয়ে এলো শত শত মানুষ। তাঁদের কণ্ঠে একটাই কথা, ‘ জয় বাংলা’।
আমরা লক্ষ করলাম এই মানুষগুলো সাবেক মেজর জেনারেলের পায়ের নিচে জড়ো হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে তার জিহ্বা আরো লকলকিয়ে উঠছে। দেখা যাচ্ছে তার জিহ্বার উপরের মানুষগুলো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে। দেখা যাচ্ছে সাবেক মেজর জেনারেল এই মানুষগুলোকে খেয়ে ফেলল। দেখা যাচ্ছে সাবেক কর্নেলের চোখ এই দৃশ্য ঠিক ঠিকই দেখতে পেল। সাবেক কর্নেল এই ঘটনায় খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে গেলো।
সাবেক কর্নেলের চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হয়ে গেল। সাবেক কর্নেলের বিস্ময় খুউব দ্রুতই রাগে রুপান্তরিত হয়ে গেলো। ফলে তার বিস্মিত চোখ সহসাই রাগান্বিত চোখে রূপান্তরিত হয়ে গেলো। তার চোখে এখন রাগের রক্তাক্ত ঝিলিক। সাবেক কর্নেল তার ছড়িটি তুলে নিলো। এবং অদ্ভুৎ ক্ষীপ্রতায় সাবেক মেজর জেনারেলের দিকে তাক করল। সাবেক কর্নেল সাবেক মেজর জেনারেলের কপাল বরাবর ছড়িটি ধরে মুখমণ্ডল বরাবর একটা বৃত্তাকার পথে ঘোরাতে চাইলো। সাবেক মেজর জেনারেলের কোনো ভাবান্তরই লক্ষ করা গেলো না এই ঘটনায়। সাবেক মেজর জেনারেলকে খুব ধীর স্থির মনে হলো। তাকে খুব শান্ত মনে হলো। তাকে খুব প্রশান্ত মনে হলো। তাকে খুব সন্তুষ্ট মনে হলো। তাকে খুব চিত্ত প্রসন্ন মনে হলো। বোঝা গেল খুব ধীর মস্তিষ্কের তিনি। বোঝা গেল তিনি সহজে অবসন্ন হন না। বোঝা গেল তিনি সহজে বিচলিত হন না। বোঝা গেল তিনি সহজে বিস্মিত হন না। বোঝা গেল তিনি সহজে বিহ্বল বোধ করেন না।
সাবেক কর্নেল তার ছড়িটি সাবেক মেজর জেনারেলের মুখমণ্ডল বরাবর একবারও বৃত্তাকার পথে ঘোরাতে পারলেন না। তার আগেই ধীর মস্তিস্কের সাবেক মেজর জেনারেলের লকলকে জিহ্বাটি অতিকায় রূপ ধারণ করল। এবং সাবেক কর্নেলকে এক চুমুক শরাবের মতো করে গিলে ফেলল।
আমরা এবার সাবেক মেজর জেনারেলের মুখের দিকে তাকানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেখানে আমরা কোনো মানুষের মুখই খুঁজে পেলাম না। সেখানে আসলে কীসের মুখ তাও আমাদের অজানা। আমরা আবার আমাদের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম।
আমি আশিককে বললাম, ‘তুই না বলেছিলি এ লোকটা একজন সাবেক মেজর জেনারেল!’
আশিক বলল, ‘বলেছিলাম।’
আমি বললাম, ‘ কিন্তু তাকে তো মানুষের মতোই মনে হচ্ছে না। তুই কি সত্যি কথা বলেছিলি?’
আশিক রেগে গেল আমার এ কথায়। বলল, ‘তুই কি ভাবিস, তুই একাই সত্য কথা বলিস? আর কেউ বলে না? আর কেউ বলতে পারে না?’